মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক 2021 ক্লাস 6 বাংলা পার্ট-5 (Model Activity Task 2021 Class-6 Bengali Part-5 2nd Series)
নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
১. ধানকাটার পর একেবারে আলাদা দৃশ্য।' — “মরশুমের দিনে গদ্যাংশ অনুসরণে সেই দৃশ্য বর্ণনা করো।
উত্তর :-ধান কাটার পর মাঠে যতদূর দৃষ্টি যায়, চোখে পড়ে রুক্ষ মাটির শুকনাে ও কঙ্কালসার চেহারা। আলগুলি বুকের পাঁজরের মতাে। রােদের দিকে তাকানাে যায় না। গােরুর গাড়ির চাকায়, মানুষের পায়ে মাটির ডেলা গুঁড়াে হয়ে রাস্তা হয়েছে আর সেই ধুলাে কথনও ঘূর্ণিঝড়ে বা দমকা হাওয়ায় উড়ে এসে চোখে-মুখে ভরে যায়। বেলা বাড়তেই মাটি গরম হয়ে ওঠে। যারা মাঠে যায়, তারা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে। পুকুর, নদী, খাল, বিল শুকিয়ে যায়। গাছে পাতা থাকে না। আগুনের হলকায় চারিদিকে হাহাকার শােনা যায়। রাখালেরা ছড়ি-পাঁচন হাতে বটঅশ্বথ, আম-কাঁঠালের ছায়ায় ঘােরে, যেখানে হাতের কাছে একটু জল পাওয়া যায়।
২. দিন ও রাতের পটভূমিতে হাটের চিত্র ‘হাট’ কবিতায় কীভাবে বিবৃত হয়েছে তা আলােচনা করাে
উত্তর :-কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় দূরে দূরে ছড়ানাে দশ বারােখানি গ্রামের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি হাটের ছবি ফুটে উঠেছে। সারাদিন এই হাট অগুনতি মানুষের কোলাহলে মুখরিত থাকে, পণ্যসামগ্রী কেনা ও বেচা নিযে নিরন্তর দরাদরি চলে। নদীর এক পারের মানুষ অন্য পারে বেচার জন্যে জিনিস নিয়ে এলে খরিদ্দারেরা তাকে ঘিরে ধরে। সকলেই যাচাই করে নিতে চায়। তাদের হাতের ছোঁয়ায় সকালে গাছ থেকে পাড়া ফল বিকেলে মলিন হয়ে যায়। হাটে প্রভাতে যেমন ঝাঁট পড়ে না, তেমনই সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বলে না বেচাকেনা সেরে বিকেলবেলায় যখন সকলে ঘরে ফিরে যায়, তখন বকের পাখা সঞ্চালনের সঙ্গে প্রকৃতিরবুকে নেমে আসে নিবিড় অন্ধকার।
৩.“মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র' রচনায় সাঁওতালি দেয়ালচিত্রের বিশিষ্টতা কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তর :-মূলত আদিবাসী সমাজেই দেয়ালচিত্র অঙ্কনের চল আছে। দেয়ালচিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ(১) মেয়েরা এই চিত্র অঙ্কন করে।
(২) বিষয়বস্তু নির্বাচন ও উপাদান সংগ্রহ তারাই করে।
(৩) দোলচিত্রগুলি অস্থায়ী।
(৪) আশ্বিনের দুর্গাপূজা ও কার্তিকের অমাবস্যা উপলক্ষ্য করে দেয়ালচিত্র আঁকা হয়।
(৫) লালচে গিরিমাটি বা কখনও দুধেমাটি উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
(৬) বিচিত্র বর্ণের সমাবেশ লক্ষ করা যায়।
(৭) দেয়ালচিত্র সর্বদা প্রকাশ্য স্থানে অঙ্কন করা হয়।
(৮) লতাপাতা, ফুল, পাখি এসব দোলচিত্রে উপস্থাপিত হয়়।
৪. “পিপড়ে' কবিতায় পতঙ্গের প্রতি কবির গভীর ভালােবাসার প্রকাশ ঘটেছে। আলােচনা করাে।
উত্তর:-‘পিঁপড়ে কবিতায় কবি পিঁপড়েকে সহানুভূতির চোখে দেখেছেন। তিনি প্রথমেই বলেছেন, “আহা পিঁপড়ে ছােটো পিঁপড়ে। এই ‘আহা’, ‘ছােটো’ কথাগুলি থেকে বােঝা যায়, পিঁপড়ের প্রতি তাঁর ভালােবাসা অত্যন্ত গভীর। শুধু তাই নয়, এই পিঁপড়ে আপনমনে চারিদিকে ‘ঘুরুক’, ‘দেখুক'—এই কথাগুলির মাধ্যমেও পিঁপড়ের প্রতিকবির গভীর দরদ প্রকাশ পায়। সাধারণত লােকে যেখানে এই তুচ্ছ পিঁপড়েকে পায়ে মাড়িয়ে চলে কিংবা নানা ওষুধ দিয়ে মেরে ফেলে, কবি সেখানে পিঁপড়ের প্রতি এতটুকু বিরূপ মনােভাব প্রকাশ না করে আদর-ভালােবাসার চোখে ,তাদের বর্ণনা করেছেন।
৫“ফাঁকি'' গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র একটি নিরীহ, নিরপরাধ আমগাছ। উদ্ধৃতিটি কতদূর সমর্থনযােগ্য?
উত্তর:-লেখক রাজকিশাের পট্টনায়কের লেখা ‘ফাঁকি’ গল্পের কেন্দ্রবিন্দু এটি আম গাছ। গােপালের বাবার তৈরি একটি কলমি আমগাছের চারা গাছটি বসানাের পর ধীরে ধীরে নিজের চেষ্টায় তা বেড়ে উঠেছিল এবং বিশাল জায়গা জুড়ে তার আভিজাত্য বিস্তার করেছিল। বাড়ির লােকজন যেমন প্রতিমুহূর্তে তার দেখাশােনা করত তেমনি পাড়ার লােক বা ছেলেরাও তার নীচে খেলাধলাে, বই পড়া, গল্প নিত্যকার কাজের জিনিস হয়ে উঠেছিল। এইভাবে বিরাট আকারের এই গাছটি গােপালের বাড়ির নিশানায় পরিণত হয়। বাড়ির হাঁদা ছেলেকে যেমন সবাই আদর করে গায়ে হাত বােলায়, তেমনই গাছটির ফল ও গাছের গায়েপাতাত বুলিয়ে বাড়ির অন্যরা যেন তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিল।একদিন আষাঢ়ের ঝড়ে গাছটি মারা গেলে শুধু গােপালদের বাড়ির লােকই নয়, পাড়ার সব লােক দুঃখ প্রকাশ করে।
পরে সবাই অবাক বিস্ময়ে দেখে গাছের একধার উইয়ে খেয়ে নিয়েছিল। গাছটি এত করা সত্বেও তার একধার উইয়ে খেয়ে নিয়েছিল তা কারাে নজরে পড়েনি যদি পড়তাে তা হলে গাছটি এইভাবে মারা যেত না তাই আমাগাছটিকে নিরীহ, নিরপরাধ বলা সমর্থণযােগ্য।
৬, পৃথিবী সবারই হােক।'— এই আশীর্বাণী “আশীর্বাদ' গল্পে কীভাবে ধ্বনিত হয়েছে?
উত্তর :-দক্ষিণারঞ্জন মিত্ৰমজুমদারের আশীর্বাদ' গল্পে উক্ত কথাটির বক্তা হল পাতা। পিঁপড়েকে দিনের শেষে মাটির নীচে আশ্রয় নিতে হয় বলে সে বলেছিল মাটি তাদের। কিন্তু পাতা বুঝিয়ে দিয়েছিল যে, মাটি সকলের। পাতার এই কথার মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে জীবজগতের প্রতিটি প্রাণীর অধিকার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এই পৃথিবীর আলাে বাতাস,জল, মাটিকে ভােগ করার অধিকার সকলেরই সমান। ব্যাপকতর অর্থে এই সত্যটিই প্রকাশিত হয়েছে উদ্ধৃটিতে।৭. “ছােট্ট গাড়ির মধ্যে যতটা আরাম করে বসা যায় বসেছি।'— এর পরবর্তী ঘটনাক্রম ‘এক ভুতুড়ে কাণ্ড’ গল্প অনুসরণে লেখাে।
উত্তর:- এক ভুতুড়ে কাণ্ড' গল্পে আমরা দেখতে পাই যে নির্জন জায়গায় সাইকেলের টায়ার ফেঁসে লেখক চরম বিপদে পড়েন। প্রথমে একটি লরি আসে কিন্তু সেটি লেখককে উদ্ধার করে না। তারপর একটি ধীর গতির বেবি অস্টিন মােটরগাড়ি আসে। লেখক মরিয়া হয়ে চলন্ত গাড়িতেই উঠে পড়েন। গাড়িতে উঠে তিনি দেখেন যে, গাড়ি চলছে কিন্তু তার ড্রাইভার নেই। ইঞ্জিনও চালু লেখক প্রথমে ভূতের ভয়ে চমকে ওঠেন। ধীরে ধীরে সংবিৎ ফেরে তাঁর গাড়ির সিটের আরাম লেখকের আলসাকে জাগিয়ে দেয়। তাই প্রথমে চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইলেও, শার্টের কলার গলার চারধারে চেপে বসলেও শেষপর্যন্ত আলস্যই জয়ী হয়। প্রথমে লেখকের জিভ টাকরায় আটকে গেলেও পরে তিনি বাক শক্তি ফিরে পান। লেখকও ভুতুড়ে গাড়ি থেকে নামলেন না আর ড্রাইভারহীন গাড়ি যেমন চলছিল তেমনি চলতে লাগল।৮“এক যে ছিল ছােট্ট হলুদ বাঘ’ ‘বাঘ’ কবিতা অনুসরণে তার কীর্তিকলাপের পরিচয় নাও।
উত্তর:-নবনীতা দেবসেনের 'বাঘ' কবিতায় একটি ছােট্ট বাঘের রাগ, দুঃখ ও নানা কর্মকাণ্ডের পরিচয় পাওয়া যায়। বাবা-মায়ের সঙ্গে সে থাকত পাখিরালয়ে। সেখানে শুধুই পাখি। ছাগল, ভেড়া, হরিণ কিছুই নেই। খাবে কী? থিদের চোটে তার মনে রাগ জমে ওঠে। জমে ওঠে অসন্তোষও। এরকম জায়গায় কেউ ডেরা বাঁধে? তবুও পেটেও জ্বালায় পাখি ধরতেই সে লাফ দেয়। পাখিরা উড়ে পালায়। তাতে সে আরও রেগে যায়। খিদে মেটানাের জন্য সে নদীর ধারে যায় কাঁকড়া ধরতে। জানত না যে দাঁড়া দিয়ে কাঁকড়া চিমটে ধরে। বাঘছানা গর্তে থাবা ঢােকাতেই কাঁকড়া তার দাঁড়া দিয়ে থাবা চিমটেধরে। যন্ত্রণায় কেঁদে ওঠে সে। তার বাবা এসে তাকে বিপদ থেকে মুক্ত করে। এরপর সে আবার মাছ ধরতে যায় জলকাদায়। এ কাজ বাঘের পক্ষে বেমানান।ভোঁদড়েরা এ কাজ করে। বাঘের মাসে-কথা বলেও দেয়। এতেও মনে কষ্ট পায় বাঘছান একদিকে খাবারের অভাব অন্যদিকে মনের কষ্ট, রাগ—সব কিছু প্রকাশ হয়েছে।
কবিতাটিতে। পেটের খিদে আর মনের কষ্ট বাঘছানাকে নানা কাজে লিপ্ত হতে চালিত করেছে।
Tags
Class 6 Part 5